বিশেষ সংবাদদাতা
পিরোজপুরের রায়েরকাঠী রাজবাড়িটি সংস্কারের অভাবে জরাজীর্ন হয়ে পড়েছে। প্রায় সাড়ে ৪শত বছর আগের এ রাজবাড়িটি রক্ষনাবেক্ষনের অভাবে এখন ধ্বংসের কিনারে পরিনত হয়েছে।
জানা গেছে, পিরোজপুর জেলা শহর থেকে সাড়ে ৩ কিলোমিটার উত্তরে রায়েরকাঠী রাজবাড়ি। আর ওই নামেই নামকরন করা হয়েছে রায়েরকাঠী গ্রামটি। আর ওই গ্রামের প্রায় ২শত একর জমির ওপর ওই রাজবাড়িটি স্থাপিত।
সরেজমিনে গিয়ে জানাগেছে, রাজবাড়ির ভবনগুলোর দেয়ালের পলেস্তরা খসে পড়ে জরাজীর্ন হয়ে পড়েছে, ছাদ ভেঙ্গে গেছে। রাজবাড়ির মঠগুলো ভেঙ্গে গেছে। এ নিদর্শন ঐতিহ্য এখন বিলীন হওয়ার পথে বসেছে। ওই রাজবাড়ির মাঝখান থেকে যাওয়া রাস্তার পূর্ব অংশে মন্দির ও পশ্চিম অংশে মুল বাড়ির ভবন রয়েছে। এখানে রয়েছে রাজভবন, নহবতখানা, বৈঠকখানা, অতিথিশালা, নাট্যশালা ও অসংখ্য মন্দির ও ভীতরের ভবনগুলো জরাজীর্ন হয়ে পড়েছে। দেশ স্বাধীনের পরে ওই রাজ বাড়ির জমির একটি অংশে জেলা পুলিশ লাইন স্থাপন করা হয়েছে। স্কুল স্থাপনের জন্য রাজবাড়ির পক্ষ থেকে সেখানে দেয়া হয়েছে জমি।
ইসকনের দ্বায়িত্ব থাকা এক কর্মকর্তা জানান, মুগোল সম্রাট শাজাহানের আমল থেকে এই জায়গাটায় ততকালীন এখানকার রাজা ছিলেন তার পরিচালনায় এখানে একাদশ রুদ্রের মন্দির ছিল ১টি মন্দির বাদে সব মন্দিরগওলো পরিত্যাক্ত হয়ে গেছে। এখানে ১টি মাত্র মহাদেবের মন্দিরে শিব লিঙ্গ এবং কালিমাতার মন্দির রয়েছে। ২০১০ সালে এই জায়গাটা ইসকনকে প্রদান করা হয়।এরপর থেকেই এখানের সেবা কার্যের দ্বয়িত্ব ইসকনই গ্রহন করে।
তিনি আরো জানান, এখানে প্রতিদিন পযটক ঘুরতে আসে। পিরোজপুরের বিতরে দর্শনীয় স্থানের বিতরে এটা উল্যেখ যোগ্য।
ওই রায়েরকাঠী রাজবাড়ির নাতি গোপাল বসু জানান, দীর্ঘ ৪’শত বছরে এই পুরাকৃতি। এক সময় এই রাজারা খাজনা তুলতেন এবং দেশ চালাতেন কালের পরিক্রমায় দেশ বিভাগের পরে আজকে রায়েরকাঠী বিলীনের পথে। আমরা বিভিন্ন সময় প্রতœতত্ব অধিদপ্তরের আবেদন নিবেদন করেছি যাতে স্থাপনাগুলোকে মেরামত করা হলে। দেশ ও বিভিন্ন দেশের পর্যটকেরা এসে ৪’শত বছরে ইতিহাস জানতে পারবে।
তিনি আরো জানান, সংস্কারের অভাবে ১১টি মঠ নষ্ট হয়ে গেছে। এশিয়া মহাদেশের সবচেয়ে বড় শিব লিঙ্গ রায়েরকাঠিতে এখনও বিদমান আছে এখানে পূজা আর্চনা করা হয়। ওই রাজবাড়ির প্রধান ফটক, রাজাদের বসবাসের ভবনগুলো, বিচারালয়, কাচারিঘর, জলসাঘর, অন্ধকুপ এগুলো বিলিন হয়ে গেছে। রক্ষনাবেক্ষনের অভাবে মূল রাজ বাড়িটি ধ্বংস হয়ে গেছে। প্রায় ৪ শত বছরের প্রাচীন কালীমন্দির ও ৭৫ ফুট উচ্চতার ১১টি মঠ। আর এগুলো ইট-সুরকি দিয়ে নিঁখুত ভাবে নির্মিত এ নির্মাণশৈলী মুঘল স্থাপত্যকলার সাক্ষী হয়ে আছে। মঠগুলোর দেয়ালে মাটির অলংকরন খসে গিয়ে জন্মেছে শেওলা আর লতাপাতা। কষ্টিপাথরের মূল্যবান শিবমূর্তি যা এশিয়া মহাদেশের বৃহৎ শিবমূর্তিগুলোর একটি। মন্দির পরিচালনা কমিটি জানান, একসময়ে এর প্রতিটি মন্দিরে এ রকম শিবমূর্তি সংরক্ষন ছিলো। কিন্তু তা দুর্বৃত্তরা চুরি করে নিয়ে গেছে।
রায়েরকাঠি শিব ও কালীমন্দির ব্যবস্থাপনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও ওই রাজবংশের ২৯তম পুরুষ গৌতম নারায়ণ রায় চৌধুরী বলেন, ‘রাজবাড়ি ও মঠগুলো সংরক্ষণ করা খুবই ব্যয়বহুল। আর এই খরচ বহন করা আমাদের পক্ষে সম্ভব না। আমরা বেশ কয়েকবার প্রত্মতত্ব কাছে এগুলো সংরক্ষণের জন্য আবেদন করেও কোনো সাড়া পাইনি।’
প্রত্মতত্ব অধিদপ্তরের খুলনার আঞ্চলিক সহকারী পরিচালক মো. গোলাম ফেরদৌস বলেন, রায়েরকাঠী রাজবাড়িটি সম্পর্কে আমাদের কাছে তেমন কোন তথ্য নেই। তবে এ ব্যাপারে লিখিত আবেদন পেলে আমরা সংরক্ষনের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন পাঠাতে পারি। এ ব্যাপারে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রনালয় সিদ্ধান্ত নেবে।
Warning: Undefined variable $aria_req in /home/u141868158/domains/ekusherkantha.com/public_html/wp-content/themes/pitwnp/comments.php on line 67
Warning: Undefined variable $aria_req in /home/u141868158/domains/ekusherkantha.com/public_html/wp-content/themes/pitwnp/comments.php on line 72
Notice: Only variables should be assigned by reference in /home/u141868158/domains/ekusherkantha.com/public_html/wp-content/themes/pitwnp/functions.php on line 285