ছোট্ট কামরুন নাহার প্রায় প্রতিদিনই তার মাকে প্রশ্ন করে, ‘মা, আব্বু কোথায়? আব্বু কখন বাসায় আসবে?’ চার বছর বয়সী মেয়েটি যতবার এ প্রশ্ন করে, মা উম্মে সালমার চোখ দিয়ে টলটল করে পানি গড়িয়ে পড়ে। কারণ, উম্মে সালমা ভালো করেই জানেন, তাঁর স্বামী রবিউল করিম আর কোনো দিন ফিরবেন না।

উম্মে সালমা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার স্বামীর ছবি দেখে যখন আমার বাচ্চারা জিজ্ঞেস করে, আব্বু কখন বাসায় ফিরবে। তখন আর আমি চোখের পানি ধরে রাখতে পারি না। তবু মিথ্যে সান্ত্বনা দিয়ে বলি, তোমাদের আব্বু বাসায় ফিরে আসবে।’

চার বছর আগে ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাজধানীর হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় নিহত হন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার রবিউল করিম। তাঁর ছেলে সাজেদুল করিম (১০) এখন চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ছে। মেয়ে কামরুন নাহার এখনো স্কুলে যাওয়া শুরু করেনি। উম্মে সালমা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা।

অন্য আর দশজন মানুষ থেকে একেবার আলাদা ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা রবিউল করিম। গরিব-অসহায় মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর স্বপ্ন দেখতেন সব সময়। তাই তো মানিকগঞ্জে নিজ গ্রামে ২০০৬ সালে প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য স্কুল করেছিলেন। স্কুলটির নাম বিকনিং লাইট অরগানাইজেশন অব ম্যানকাইন্ড অ্যান্ড সোসাইটি (ব্লুমস)।